Pages

Sunday, January 29, 2012

তিন গোয়েন্দা সিরিজটি দেশে ও বিদেশে / মুভি

থ্রি-ইনভেস্টিগেটর সিরিজটি বিশ্বব্যাপী ভীষণ জনপ্রিয়। আমেরিকান কিশোর গোয়েন্দা বা থ্রিলার লেখক রবার্ট আর্থার কর্তৃক রচিত এ সিরিজটি নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় গ্রন্থ রচিত হয়েছে।
রবার্ট আর্থার টেরর ক্যাসলের প্রথম বইটি প্রকাশ করেন ১৯৬৪ সালে এবং এ সিরিজটি তিনি ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত প্রকাশ করেন। মোটামুটি ৪৩টি বই তিনি এ সিরিজ থেকে প্রকাশ করেন।

আমাদের পাশের দেশ ভারতে এবং পাকিস্তানেও এ সিরিজটি হয়েছে।
ভারতে 'বাল সিকেট এজেন্ট ৫৫৫ রাঙা, গঙ্গা ও সিরাজী' এ শিরোনামে কিশোর থ্রিলার বা তিন গোয়েন্দা সিরিজ চলেছে। রাঙা হচ্ছে পিট, গঙ্গা হচ্ছে জুপি এবং সিরাজী হচ্ছে বব। ১৯৭০-এর দশকে দিলি্লর ওয়েস্ট প্যাটেল নগরের খেল-খিলাদি প্রকাশনের ব্যানারে এ সিরিজ প্রকাশিত হয়।
পাকিস্তানে উর্দু ভাষায় এ সিরিজটি প্রকাশিত হয় ফিরোজানস প্রকাশনীর ব্যানারে। সেখানে ১৯৮০'র দশকের শুরুতে এ সিরিজটি প্রকাশিত হয়। উর্দুতে তিন গোয়েন্দার চরিত্রটি এরকম উম্বার (জুপিটার জোনস), নাসিম (পিট), আকিব (বব)। তাদের মার্সিডিজ ড্রাইভারের নাম আল্লাহবাদ। তারা বসবাস করে করিমাবাদে। সলিম আহমেদ সিদ্দিকী এবং মকবুল জাহাঙ্গীর হচ্ছেন তিন গোয়েন্দার পাকিস্তান ভার্সনের অনুবাদক। পাকিস্তানের সংস্কৃতি এবং আবহাওয়ার সঙ্গে সমন্বয় করে তারা খুব সুন্দরভাবে সিরিজটি অনুবাদ করেছেন।
ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, স্পেন, ফ্রান্স, ইতালি, সস্নোভাকিয়া, পোলান্ড, জার্মানিতে এ তিন গোয়েন্দা সিরিজ প্রকাশিত হয়েছে।
আমেরিকাতে এবং জার্মানিতে থ্রি-ইনভেস্টিগেটর বা তিন গোয়েন্দা নিয়ে চর্চাটা একটু বেশি হয়েছে। জার্মানিতে রেডিও ড্রামাও হয়েছে থ্রি-ইনভেস্টিগেটর বা তিন গোয়েন্দা নিয়ে। অস্টিয়া ও জার্মানদের উদ্যোগে থ্রি-ইনভেস্টিগেটর বা তিন গোয়েন্দার ওপর দুটো চলচ্চিত্রও নির্মিত হয়েছে। একটি হচ্ছে টেরর ক্যাসল নিয়ে এবং অন্যটি হচ্ছে কঙ্কাল দ্বীপ নিয়ে।
বাংলাদেশে সেবা প্রকাশনীর ব্যানারে যে তিন গোয়েন্দা সিরিজ বের হয়েছে তাতে দেখা যায়, জুপিটার জোনস হচ্ছে একজন বাংলাদেশি আমেরিকান যার নাম কিশোর পাশা। অন্য দুজন হচ্ছে মুসা আমান (আফ্রিকান অমেরিকান) এবং রবিন মিলফোর্ড (আইরিশ আমেরিকান)। কখনো কখনো জিনা এবং তার পোষা কুকুর রাফিয়ান ওদের সঙ্গে যোগ দেয়। চাওফার চরিত্র এখানে হানসন, স্কিনি নরিস হচ্ছে শুঁটকি টেরি, ভিক্টর সিমন হচ্ছে হেক্টর সেবাসটিয়ান, বিখ্যাত পরিচালক আলফ্রেড হিচকক হচ্ছেন ডেভিস ক্রিস্টোফার এবং ফ্রেন্স চোর হচ্ছে শোপা। বাংলাদেশি ভার্সনের মূল ধারণা হচ্ছে_ আমেরিকান সোসাইটি যেটি বাংলাদেশের লোকেশনে কল্পনা করা ভীষণ কঠিন। রকিব হাসান এটি অনুবাদ করেন। আমাদের দেশে ১৯৮৫ সালের আগস্ট মাসে সেবা প্রকাশনীর ব্যানারে রকিব হাসান সর্বপ্রথম এটি রচনা করেন। অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান অবশ্য আমাদের দেশে এ সিরিজটি আনেনি। তবে তারা আনলেও কোনো আইনগত ঝামেলা ছিল না। শুধু জনপ্রিয়তার কথা বিবেচনা করেই হয়তো তারা সেটা করেনি। 
তিন গোয়েন্দা সিরিজ বাংলাদেশসহ পৃথিবীর ৩০ টিরও বেশি দেশে প্রচলিত । তাহলে শুধু জার্মানীতে কেন এর মুভি নির্মিত হচ্ছে ?
এর কারণ হল :জার্মানীতে তিন গোয়েন্দার জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী । প্রতিবছর দেশটিতে তিন গোয়েন্দার প্রায় ৩০ লাখ কপি বই এবং অডিও ক্যাসেট বিক্রি হয় যা অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি । আর এ জনপ্রিয়তার কারণেই তিন গোয়েন্দাকে রূপালী পর্দায় তুলে ধরার কাজটি সর্বপ্রথম জার্মানীতেই শুরু হয়েছে। 
ছবির বাম পাশে পিট হচ্ছে মুসা , মাঝখানেজুপিটর হচ্ছে কিশোর পাশা আর ডান পাশে কোকড়া চুলো বব হচ্ছে রবিন ।  
"কঙ্কাল দ্বীপ" মুভিটি বানাতে খরচ হয়েছিল ১ কোটি ১০ লাখ (!!!) ইউরো , যা ছবিটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান "হামবুর্গ পিকচারস" এর ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যয়বহুল।     (সংগৃহীত)

2 comments: